ঢাকা ১১:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জিসাসের কেন্দ্রীয় পদ থেকে হেলাল উদ্দিন হেলাল বহিষ্কার সার্চ ইঞ্জিন সিজন-২: তথ্য-প্রযুক্তির আলোয় বাংলাদেশ সীমান্তে ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট ও চোরাচালানী মালামাল আটক আহমেদ সাজু’র অ্যাকশন চলচ্চিত্র ‘মৃত্যুদূত’ বাজিমাত দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ইএইচএ-এইচএসবি হেমাটোলজি টিউটোরিয়াল রাজশাহীতে পুকুর ভরাট : প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, জলাশয় সংকট বৃদ্ধি যশোর সীমান্তে চোরাচালানী মালামাল আটক সাংবাদিকতা ও মিডিয়ার সেরাদের অ্যাওয়ার্ড দেবে ডিজিটাল মিডিয়া ফোরাম (ডিএমএফ) ধান্যখোলা সীমান্তের শূন্যরেখায় প্রিয়জনের মরদেহ শেষবারের মতো দেখলো স্বজনরা যশোর সীমান্তে অবৈধ চোরাচালানী মালামাল আটক

গাজায় বিতর্কিত জিএইচএফের দেওয়া ত্রাণ নিতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনির ভিড়। ২৭ মে, রাফাহছবি: রয়টার্স

গাজায় বিতর্কিত সংস্থার ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ৩ ফিলিস্তিনি নিহত, আহত ৪৬

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:১৪:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫ ৭৩ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফিলিস্তিনের গাজা নগরের রাফাহ এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে খাদ্য নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪৬ জন, নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৭ ফিলিস্তিনি। গাজার কর্তৃপক্ষ সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামের বিতর্কিত একটি সংস্থা এই সাহায্য কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে এই ত্রাণকাজ পরিচালিত হচ্ছে। সমালোচকেরা মনে করেন, গাজার প্রকৃত মানবিক প্রয়োজনের বদলে রাজনৈতিক ও সামরিক কৌশলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই বিতরণ ব্যবস্থা চালু করেছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র।

জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণের খবর শুনে সেখানে বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি ভিড় করেন। তবে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে হতাহতের ঘটনাটি সংস্থাটি অস্বীকার করেছে।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সাংবাদিকরা জানান, ত্রাণকেন্দ্রের সামনে বহু ক্ষুধার্ত মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিলেন। কারণ, সাহায্য দেওয়ার আগে প্রত্যেককে তল্লাশি করে ঢোকানো হচ্ছিল। এতে অনেক দেরি হচ্ছিল। এই দেরির কারণে তারা হঠাৎ করে ভেতরে ঢুকে পড়েন। এরপরই বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, আর তখনই শোনা যায় গুলির শব্দ। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত বিতর্কিত জিএইচএফের সাহায্য বিতরণ কর্মসূচি পুরোপুরি ভেঙে পড়ে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেলে জিএএইচএফের সঙ্গে জড়িত মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধার করতে তৎপরতা শুরু করা হয়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও দাবি করেছে, তারা ত্রাণ নিতে আসা মানুষের দিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়নি। তবে ঘটনাস্থলে গুলির শব্দ শোনা যায়, যা হয়তো ওই কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মার্কিন ভাড়াটে প্রহরীদের সতর্কতামূলক গুলি হতে পারে।

গাজার সরকারি জনসংযোগ অফিস জানিয়েছে, ‘আজকের ঘটনা পরিষ্কারভাবে দেখিয়ে দেয়, দখলদার ইসরায়েল যে মানবিক সংকট ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করেছে, তা সামাল দিতে সম্পূর্ণভাবে তারা ব্যর্থ।

জনসংযোগ বিভাগ বলেছে, এই খাদ্য নিরাপত্তায় বিপর্যয়ের জন্য আমরা দখলদার ইসরায়েলকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করছি। আইনগত ও নৈতিক—উভয় দিক থেকে তারা এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী।’

জনসংযোগ অফিস আরও বলেছে, গাজার চারদিকে চরম খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় এই বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে কোনো আন্তর্জাতিক সাহায্য, খাবার, ওষুধ বা জ্বালানি ভেতরে ঢুকতে পারছে না।

জিএইচএফের ত্রাণ নিয়ে সন্দেহ

ত্রাণকেন্দ্রে এই বিশৃঙ্খলার আগে গত সোমবার গাজায় জিএইচএফের পক্ষ থেকে কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়। ছবিতে দেখা যায়, কিছু পুরুষ বড় বড় কার্টন হাতে নিয়ে ক্যামেরার বিপরীতে হেঁটে যাচ্ছেন। এমন একটি পথ দিয়ে তাঁরা যাচ্ছেন, যার দুই পাশে কাটাতারের বেড়া। দেখতে অনেকটা সামরিক এলাকার মতো।

জিএইচএফের দাবি, এগুলো তাদের খাদ্য সাহায্য বিতরণ কার্যক্রমের শুরু।

তবে গাজায় বসবাসরত মানুষ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা এসব ছবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

 

সুত্র:

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

গাজায় বিতর্কিত জিএইচএফের দেওয়া ত্রাণ নিতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনির ভিড়। ২৭ মে, রাফাহছবি: রয়টার্স

গাজায় বিতর্কিত সংস্থার ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ৩ ফিলিস্তিনি নিহত, আহত ৪৬

আপডেট সময় : ১০:১৪:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজা নগরের রাফাহ এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে খাদ্য নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪৬ জন, নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৭ ফিলিস্তিনি। গাজার কর্তৃপক্ষ সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামের বিতর্কিত একটি সংস্থা এই সাহায্য কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে এই ত্রাণকাজ পরিচালিত হচ্ছে। সমালোচকেরা মনে করেন, গাজার প্রকৃত মানবিক প্রয়োজনের বদলে রাজনৈতিক ও সামরিক কৌশলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই বিতরণ ব্যবস্থা চালু করেছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র।

জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণের খবর শুনে সেখানে বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি ভিড় করেন। তবে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে হতাহতের ঘটনাটি সংস্থাটি অস্বীকার করেছে।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সাংবাদিকরা জানান, ত্রাণকেন্দ্রের সামনে বহু ক্ষুধার্ত মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিলেন। কারণ, সাহায্য দেওয়ার আগে প্রত্যেককে তল্লাশি করে ঢোকানো হচ্ছিল। এতে অনেক দেরি হচ্ছিল। এই দেরির কারণে তারা হঠাৎ করে ভেতরে ঢুকে পড়েন। এরপরই বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, আর তখনই শোনা যায় গুলির শব্দ। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত বিতর্কিত জিএইচএফের সাহায্য বিতরণ কর্মসূচি পুরোপুরি ভেঙে পড়ে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেলে জিএএইচএফের সঙ্গে জড়িত মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধার করতে তৎপরতা শুরু করা হয়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও দাবি করেছে, তারা ত্রাণ নিতে আসা মানুষের দিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়নি। তবে ঘটনাস্থলে গুলির শব্দ শোনা যায়, যা হয়তো ওই কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মার্কিন ভাড়াটে প্রহরীদের সতর্কতামূলক গুলি হতে পারে।

গাজার সরকারি জনসংযোগ অফিস জানিয়েছে, ‘আজকের ঘটনা পরিষ্কারভাবে দেখিয়ে দেয়, দখলদার ইসরায়েল যে মানবিক সংকট ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করেছে, তা সামাল দিতে সম্পূর্ণভাবে তারা ব্যর্থ।

জনসংযোগ বিভাগ বলেছে, এই খাদ্য নিরাপত্তায় বিপর্যয়ের জন্য আমরা দখলদার ইসরায়েলকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করছি। আইনগত ও নৈতিক—উভয় দিক থেকে তারা এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী।’

জনসংযোগ অফিস আরও বলেছে, গাজার চারদিকে চরম খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় এই বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে কোনো আন্তর্জাতিক সাহায্য, খাবার, ওষুধ বা জ্বালানি ভেতরে ঢুকতে পারছে না।

জিএইচএফের ত্রাণ নিয়ে সন্দেহ

ত্রাণকেন্দ্রে এই বিশৃঙ্খলার আগে গত সোমবার গাজায় জিএইচএফের পক্ষ থেকে কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়। ছবিতে দেখা যায়, কিছু পুরুষ বড় বড় কার্টন হাতে নিয়ে ক্যামেরার বিপরীতে হেঁটে যাচ্ছেন। এমন একটি পথ দিয়ে তাঁরা যাচ্ছেন, যার দুই পাশে কাটাতারের বেড়া। দেখতে অনেকটা সামরিক এলাকার মতো।

জিএইচএফের দাবি, এগুলো তাদের খাদ্য সাহায্য বিতরণ কার্যক্রমের শুরু।

তবে গাজায় বসবাসরত মানুষ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা এসব ছবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

 

সুত্র: