ঢাকা ১১:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জিসাসের কেন্দ্রীয় পদ থেকে হেলাল উদ্দিন হেলাল বহিষ্কার সার্চ ইঞ্জিন সিজন-২: তথ্য-প্রযুক্তির আলোয় বাংলাদেশ সীমান্তে ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট ও চোরাচালানী মালামাল আটক আহমেদ সাজু’র অ্যাকশন চলচ্চিত্র ‘মৃত্যুদূত’ বাজিমাত দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ইএইচএ-এইচএসবি হেমাটোলজি টিউটোরিয়াল রাজশাহীতে পুকুর ভরাট : প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, জলাশয় সংকট বৃদ্ধি যশোর সীমান্তে চোরাচালানী মালামাল আটক সাংবাদিকতা ও মিডিয়ার সেরাদের অ্যাওয়ার্ড দেবে ডিজিটাল মিডিয়া ফোরাম (ডিএমএফ) ধান্যখোলা সীমান্তের শূন্যরেখায় প্রিয়জনের মরদেহ শেষবারের মতো দেখলো স্বজনরা যশোর সীমান্তে অবৈধ চোরাচালানী মালামাল আটক

মবের মুখে সাংবাদিকতা, সাংবাদিকের সুরক্ষা কোথায় ?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:০৪:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬৫ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

(জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ,সোয়েব সিকদার)– সাংবাদিকদের ওপর হামলা, নির্যাতনের আরো খবর এসেছে গত তিন দিনে৷ গত ২৮ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি (ডিআরইউ)-তে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে সাংবাদিক মঞ্জুররুল আলম পান্নাসহ অনেকে মব সন্ত্রাসের শিকার হন৷ মব সন্ত্রাসের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দু’জন সাংবাদিকও ছিলেন৷ কিন্তু মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, উল্টো সাংবাদিক পান্নাসহ ১৬জনকে সন্ত্রাস দমন আইনের মামলায় পাঠানো হয়েছে কারাগারে। আমন্ত্রণ পেয়ে সাংবাদিক মাহবুব কামালও যোগ দিয়েছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। সেদিনের দুর্ভোগের বিষয়ে জানাতে গিয়ে তিনি বলেন,” ওই দিন প্রায় আড়াই ঘণ্টা আমি একটি কক্ষে মবের ভয়ে লুকিয়ে ছিলাম। পরে মব, পুলিশ অন্যদের নিয়ে চলে যাওয়ার পর আমাকে খবর দিলে আমি ডিআরইউ থেকে নিরাপদে চলে যাই।”

“পুরোটা সময় আমি আতঙ্কে ছিলাম। আমি ভাবতেই পারছিলাম না যে, এরকম একটি অনুষ্ঠানে মবের হামলা হতে পারে। ওখানে শিক্ষক ছিলেন, সাংবাদিক ছিলেন, আরো অনেকে ছিলেন। আর মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান নিয়ে এরকম আলোচনা তো টুকটাক আগেও হয়েছে। কিন্তু এবার ঘোষণা দিয়ে হামলা হলো। কিন্তু পুলিশ মবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যাবস্থা না নিয়ে উল্টো যারা মবের শিকার, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করলো। এই মামলা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অনুমোদন না দিলে হয় না।,”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,” আমি নিজে এখন আর কোনো চাপের মুখে নাই। নিয়মিত অফিস করছি। কিন্তু সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না, শিক্ষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনকে কেন কারাগারে পাঠানো হলো? এটা তো পরিকল্পিত। এটা তো ভয়ের পরিবেশ, মবের পরিবেশ তৈরি করে।”

এদিকে রবিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন ডেইলি বাংলাদেশ টাইমের সিনিয়র সাংবাদিক সোয়েব সিকদার এবং ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের দুই সাংবাদিক। তারা হলেন, সিফায়েত উল্লাহ সিফাত ও মাহফুজ আলম। পরিচয় জানার পরও তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।

ময়মনসিংহে সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এক সাংবাদিক। দৈনিক জনতার ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানা প্রতিনিধি সংবাদিক মহিবুবল্লাহ খান ১১ আগস্ট ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে তার পরিস্থিতির কথা জানান।গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চিত্র সাংবাদিক ইমরান হোসেনের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে খবর সংগ্রহ করতে দিয়ে হামলার শিকার হন সাংবাদিক জাবেদ আখতার। তার ওপরও টার্গেট করে হামলা চালানো হয়।জুলাই আন্দোলনের সময়ও সাংবাদিকরা হামলার শিকার হন। ২০২৫ সালের ১৫ এবং ১৬ জুলাই দুই দিনে ২৫ জন সাংবাদিক হামলার শিকার হন।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসাবে গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট- এই আট মাসে ২৭৪ জন সাংবাদিক হামলা, নির্যাতন ও মামলার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৩ জন সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নির্যাতন ও হামলার শিকার হন। সাংবাদিক নির্যাতনে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ছাড়াও প্রশাসন ও পুলিশের লোবজনও আছেন।ওই সময়ে হত্যার হুমকি পেয়েছেন ১১ জন সাংবাদিক। আর ৪৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

‘আমি প্রতিদিনই হুমকি পাচ্ছি’ সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, “এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সাংবাদিকদের ব্যাপক হুমকি দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যারা সরকারের সমালোচনা করেন, তাদের বিদেশ থেকেও কয়েকজন ইউটিউবার নিয়মিত হুমকি দিচ্ছেন। আর সাংবাদিকরা মবের ভয়ে থাকেন। কখন না আবার কোন সংবাদ মাধ্যমের সামনে গিয়ে গরু জবাই করে জিয়াফত করার ঘোষণা দেয়।”

তার কথা, ” সাংস্কৃতিক উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করার দায়ে সাংবাদিকদের চাকরি গেল। তারা বলবেন, আমরা তো চাকরি থেকে বাদ দিতে বলিনি। কিন্তু কোনো -না-কোনো ভয়ের কারণে তো তাদের প্রতিষ্ঠান চাকরি থেকে ওই সাংবাদিকদের বাদ দিতে বাধ্য হয়েছে। বিভিন্ন গ্রুপ খুলে সাংবাদিকদের ছবি দিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে। কালচারাল ফ্যাসিস্ট বলে ট্যাগ দেয়া হচ্ছে। একটা ভয়ের পরিবেশ।”নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে সাংবাদিক ,সোশ্যাল ওয়ার্কার সোয়েব সিকদার বলেন, “আমি মাঝেমধ্যেই হুমকি পাই। দেশের বাইরে থেকে আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। বলা হচেছ, আমাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন? আমি ভয় পাই না, কিন্ত আমার আত্মীয় -স্বজন কিন্তু ভয় পাচ্ছে। তারা মনে করছেন, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার মতো আমাকেও কোনো মামলায় জেলে পাঠানো হতে পারে।”

তার কথা, “সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাকে সন্ত্রাস দমন আইনের মামলায় কারাগারে পাঠানো আমাদের জন্য একটা মেসেজ। যারা সরকারের সমালোচনা করে তাদের সরকার সরাসরি কিছু বলতে হয়তো লজ্জা পায়। তাই কোনো একটা মামলায় জড়িয়ে দেয়।”গত ৪ আগস্ট ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ‘কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছর: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়নি। তারা বলেছে, গণমাধ্যম কার্যালয়গুলোতে মব তৈরি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে টিআইবি বলছে, সাংবাদিক, লেখক ও মানবাধিকারকর্মীদের ওপর হামলা ও হয়রানির ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ৪৯৬ জন সাংবাদিক হয়রানির শিকার হয়েছেন, এর মধ্যে ২৬৬ জনকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সংক্রান্ত হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। তিনজন সাংবাদিক দায়িত্ব পালনকালে হামলায় নিহত হয়েছেন (আগস্ট ২০২৪ থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত)।

টিআইবি বলছে, এ পর্যন্ত ২৪ জনের বেশি গণমাধ্যমকর্মীকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে; ৮টি সংবাদপত্রের সম্পাদক এবং ১১টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বার্তা প্রধানকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং অন্তত: ১৫০ জন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গণমাধ্যম কার্যালয়গুলোতে মব তৈরি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও টিআইবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

টিআইবির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, প্রেস অ্যাক্রিডিট

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

মবের মুখে সাংবাদিকতা, সাংবাদিকের সুরক্ষা কোথায় ?

আপডেট সময় : ১২:০৪:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

(জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ,সোয়েব সিকদার)– সাংবাদিকদের ওপর হামলা, নির্যাতনের আরো খবর এসেছে গত তিন দিনে৷ গত ২৮ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি (ডিআরইউ)-তে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে সাংবাদিক মঞ্জুররুল আলম পান্নাসহ অনেকে মব সন্ত্রাসের শিকার হন৷ মব সন্ত্রাসের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দু’জন সাংবাদিকও ছিলেন৷ কিন্তু মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, উল্টো সাংবাদিক পান্নাসহ ১৬জনকে সন্ত্রাস দমন আইনের মামলায় পাঠানো হয়েছে কারাগারে। আমন্ত্রণ পেয়ে সাংবাদিক মাহবুব কামালও যোগ দিয়েছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। সেদিনের দুর্ভোগের বিষয়ে জানাতে গিয়ে তিনি বলেন,” ওই দিন প্রায় আড়াই ঘণ্টা আমি একটি কক্ষে মবের ভয়ে লুকিয়ে ছিলাম। পরে মব, পুলিশ অন্যদের নিয়ে চলে যাওয়ার পর আমাকে খবর দিলে আমি ডিআরইউ থেকে নিরাপদে চলে যাই।”

“পুরোটা সময় আমি আতঙ্কে ছিলাম। আমি ভাবতেই পারছিলাম না যে, এরকম একটি অনুষ্ঠানে মবের হামলা হতে পারে। ওখানে শিক্ষক ছিলেন, সাংবাদিক ছিলেন, আরো অনেকে ছিলেন। আর মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান নিয়ে এরকম আলোচনা তো টুকটাক আগেও হয়েছে। কিন্তু এবার ঘোষণা দিয়ে হামলা হলো। কিন্তু পুলিশ মবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যাবস্থা না নিয়ে উল্টো যারা মবের শিকার, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করলো। এই মামলা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অনুমোদন না দিলে হয় না।,”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,” আমি নিজে এখন আর কোনো চাপের মুখে নাই। নিয়মিত অফিস করছি। কিন্তু সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না, শিক্ষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনকে কেন কারাগারে পাঠানো হলো? এটা তো পরিকল্পিত। এটা তো ভয়ের পরিবেশ, মবের পরিবেশ তৈরি করে।”

এদিকে রবিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন ডেইলি বাংলাদেশ টাইমের সিনিয়র সাংবাদিক সোয়েব সিকদার এবং ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের দুই সাংবাদিক। তারা হলেন, সিফায়েত উল্লাহ সিফাত ও মাহফুজ আলম। পরিচয় জানার পরও তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।

ময়মনসিংহে সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এক সাংবাদিক। দৈনিক জনতার ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানা প্রতিনিধি সংবাদিক মহিবুবল্লাহ খান ১১ আগস্ট ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে তার পরিস্থিতির কথা জানান।গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চিত্র সাংবাদিক ইমরান হোসেনের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে খবর সংগ্রহ করতে দিয়ে হামলার শিকার হন সাংবাদিক জাবেদ আখতার। তার ওপরও টার্গেট করে হামলা চালানো হয়।জুলাই আন্দোলনের সময়ও সাংবাদিকরা হামলার শিকার হন। ২০২৫ সালের ১৫ এবং ১৬ জুলাই দুই দিনে ২৫ জন সাংবাদিক হামলার শিকার হন।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসাবে গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট- এই আট মাসে ২৭৪ জন সাংবাদিক হামলা, নির্যাতন ও মামলার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৩ জন সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নির্যাতন ও হামলার শিকার হন। সাংবাদিক নির্যাতনে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ছাড়াও প্রশাসন ও পুলিশের লোবজনও আছেন।ওই সময়ে হত্যার হুমকি পেয়েছেন ১১ জন সাংবাদিক। আর ৪৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

‘আমি প্রতিদিনই হুমকি পাচ্ছি’ সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, “এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সাংবাদিকদের ব্যাপক হুমকি দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যারা সরকারের সমালোচনা করেন, তাদের বিদেশ থেকেও কয়েকজন ইউটিউবার নিয়মিত হুমকি দিচ্ছেন। আর সাংবাদিকরা মবের ভয়ে থাকেন। কখন না আবার কোন সংবাদ মাধ্যমের সামনে গিয়ে গরু জবাই করে জিয়াফত করার ঘোষণা দেয়।”

তার কথা, ” সাংস্কৃতিক উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করার দায়ে সাংবাদিকদের চাকরি গেল। তারা বলবেন, আমরা তো চাকরি থেকে বাদ দিতে বলিনি। কিন্তু কোনো -না-কোনো ভয়ের কারণে তো তাদের প্রতিষ্ঠান চাকরি থেকে ওই সাংবাদিকদের বাদ দিতে বাধ্য হয়েছে। বিভিন্ন গ্রুপ খুলে সাংবাদিকদের ছবি দিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে। কালচারাল ফ্যাসিস্ট বলে ট্যাগ দেয়া হচ্ছে। একটা ভয়ের পরিবেশ।”নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে সাংবাদিক ,সোশ্যাল ওয়ার্কার সোয়েব সিকদার বলেন, “আমি মাঝেমধ্যেই হুমকি পাই। দেশের বাইরে থেকে আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। বলা হচেছ, আমাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন? আমি ভয় পাই না, কিন্ত আমার আত্মীয় -স্বজন কিন্তু ভয় পাচ্ছে। তারা মনে করছেন, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার মতো আমাকেও কোনো মামলায় জেলে পাঠানো হতে পারে।”

তার কথা, “সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাকে সন্ত্রাস দমন আইনের মামলায় কারাগারে পাঠানো আমাদের জন্য একটা মেসেজ। যারা সরকারের সমালোচনা করে তাদের সরকার সরাসরি কিছু বলতে হয়তো লজ্জা পায়। তাই কোনো একটা মামলায় জড়িয়ে দেয়।”গত ৪ আগস্ট ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ‘কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছর: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়নি। তারা বলেছে, গণমাধ্যম কার্যালয়গুলোতে মব তৈরি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে টিআইবি বলছে, সাংবাদিক, লেখক ও মানবাধিকারকর্মীদের ওপর হামলা ও হয়রানির ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ৪৯৬ জন সাংবাদিক হয়রানির শিকার হয়েছেন, এর মধ্যে ২৬৬ জনকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সংক্রান্ত হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। তিনজন সাংবাদিক দায়িত্ব পালনকালে হামলায় নিহত হয়েছেন (আগস্ট ২০২৪ থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত)।

টিআইবি বলছে, এ পর্যন্ত ২৪ জনের বেশি গণমাধ্যমকর্মীকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে; ৮টি সংবাদপত্রের সম্পাদক এবং ১১টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বার্তা প্রধানকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং অন্তত: ১৫০ জন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গণমাধ্যম কার্যালয়গুলোতে মব তৈরি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও টিআইবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

টিআইবির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, প্রেস অ্যাক্রিডিট